শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধি:
ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে অসহায় দরিদ্রদের জন্য সরকারের বিশেষ বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল আত্মসাতের ঘটনায় জেলার উজিরপুর উপজেলায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গরীবের চাল আত্মসাতের ঘটনায় ভূক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যানের বিচারের দাবীতে মামলা দায়েরসহ বিক্ষোভকারী শতাধিক পরিবারকে চেয়ারম্যানের সহযোগীরা বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্রমতে, ভিজিএফ’র চাল আত্মসাতকারী উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আদালতে ভূক্তভোগীদের পক্ষে মামলা দায়েরের পরেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নীরব ভূমিকার জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, চাল আত্মসাতকৃত জল্লা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু উপজেলা চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
জানা গেছে, ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে সরকারীভাবে জল্লা ইউনিয়নের দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ’র প্রাপ্ত চাল না দিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু নিজেই আত্মসাত করেন। ওই চাল বিক্রি করার জন্য পাচারের সময় গত ২৮ আগস্ট স্থানীয়রা হাতেনাতে চাল জব্দ করেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের কবল থেকে ২ হাজার ২৫০ কেজি ভিজিএফ’র চাল জব্দ করে। একই সময় ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম সিলগালা করা হয়। এ ঘটনার ছয়দিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ওই ইউনিয়নের বাহেরঘাট গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ হাওলাদার বাদী হয়ে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছেন, ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু, ওএমএস ডিলার প্রীতম বিশ্বাস ও তাদের সহযোগী সুশান্ত হালদার, রমেশ বিশ্বাস, দুলাল বিশ্বাস। বর্তমানে মামলাটি আদালতের নির্দেশে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।
অভিযোগ রয়েছে, মামলা দায়েরের পর থেকে বাদি এরশাদ হাওলাদারসহ তার পরিবারকে হত্যার অব্যাহত হুমকি দিয়ে আসছে চেয়ারম্যানের সহযোগীরা। এদিকে ভিজিএফের চাল আত্মসাতকারী চেয়ারম্যানের অপসারনসহ তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত কয়েকদিন থেকে জল্লা ইউনিয়নে পৃথকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ভূক্তভোগীরা।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা আন্দোলনকারী শতাধিক পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি অব্যাহত রেখেছেন। জনতার হাতে সরকারী চাল জব্দ হলেও চেয়ারম্যান অর্থের বিনিময়ে কতিপয় মিডিয়া কর্মীর মাধ্যমে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
Leave a Reply